যখন ভগবান শ্রীরামচন্দ্র রাবনকে বধ করার উদ্দেশ্যে লঙ্কা যাওয়ার জন্য সেতু বন্ধন করছিলেন, তখন বানরেরা অনেক ভারী ভারী পাথর উত্তোলন করে সমুদ্রে ফেলছিল। সেই বানরদের মধ্যে হনুমান অনেক শক্তিশালী ছিলেন। কিন্তু সেখানে একটি কাঠবিড়ালী ছিল, যে বালির উপর গড়াগড়ি দিয়ে সেই বালি নিয়ে সেতুর উপর ফেলে তাদের সাহায্য করছিল। আর সেটা দেখে হনুমান কাঠবিড়ালীকে উপহাস করছিল।
এই দৃশ্য দেখে ভগবান রামচন্দ্র হনুমানকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, “হনুমান বলো তো আমি কেন এই সেতু নির্মাণ করছি?”
উত্তরে হনুমান বলল, “সমুদ্রকে অতিক্রম করতে।”
তখন শ্রীরাম বললেন, “এটা সত্যি নয়, আমার সমুদ্র অতিক্রম করার প্রয়োজন নেই, কারণ কিছুক্ষণ পূর্বেই সামান্য ক্রোধান্বিত হয়েছিলাম বলে সমগ্র সমুদ্র শুকিয়ে গিয়েছিল, আবার শুধুমাত্র আমার নাম লিখতেই পাথরগুলো ভাসতে শুরু করল। প্রকৃতপক্ষে আমি যদি চাই তাহলে চোখের পলকে লঙ্কায় চলে যেতে পারি, তাহলে এত শক্তি প্রয়োগের কি প্রয়োজন?”
হনুমান আবার বললেন, “কারণ আপনি রাবনকে হত্যা করতে চান।” তখন ভগবান শ্রীরামচন্দ্র বললেন, “যদি আমি রাবনের হৃদয় থেকে চলে যাই, তাহলেই রাবনের মৃত্যু হবে, কারণ আমি তার হৃদয়ে পরমাত্মারূপে আছি বলেই সে জীবিত আছে।” তখন হনুমান খুব বিনীতভাবে সেতুবন্ধনের কারণ জিজ্ঞাসা করল। তখন শ্রীরাম বললেন, “একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে তোমাদের সবাইকে ভক্তিমূলক সেবা দানের মাধ্যমে বিশুদ্ধ করা।” শুধু কাঠবিড়ালী নয় দেখো তোমার মতই এই মাকড়সাও ভক্তিমূলক সেবায় তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টাকে কাজে লাগাচ্ছে। আর এই ভক্তিমূলক সেবাই হচ্ছে জীবাত্মাকে শুদ্ধ চেতনায় অধিষ্ঠিত করার একমাত্র উপায়।
👇হিতোপদেশ👇
সেবা যে রকমেরই হোক না কেন এতে কোন স্তর ভেদ করা উচিত নয়। সবসময় সেবায় নিজের সর্বোত্তম প্রচেষ্টাকে নিয়োজিত করা উচিত। আর ভগবান সেই সেবামুখী মনোভাবকেই গ্রহণ করেন। কারণ ভক্তিমূলক সেবায় নিয়োজত হবার ফলেই একমাত্র শুদ্ধ চেতনায় অধিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব হয়।